
মাইনুল ইসলাম
জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি সংক্রান্ত এক নজিরবিহীন জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সহ পিয়নের বিরুদ্ধে সরকারি উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের পিয়ন মো. রিপন মিয়ার সাথে তার বেশ কিছুদিন আগে যৌতুকের টাকা দিতে না পারার কারণে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে মেয়ে বন্যা মনির নামে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, বন্যা মনির আসল নাম, জন্মসনদ নম্বর ও জন্ম তারিখ ঠিক রেখে জন্মসনদে তার মা-বাবার নাম পরিবর্তন করে অন্য নারী-পুরুষের নাম বসানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল – জীবিত বাবা-মা থাকা সত্ত্বেও অন্যকে অভিভাবক দেখিয়ে সরকারি উপবৃত্তি তুলে নেওয়া।
বন্যা মনির জন্মদাত্রী মা মোছা. আঁখি বেগম গত ১৮ ও ১৯ মে, ২০২৫ তারিখে উলিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে তিনি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, প্রধান শিক্ষিকার সহায়তায় রিপন এই অনৈতিক কাজটি করেছেন। বন্যা মনির মা আঁখি বেগম বলেন এটি শুধু বেআইনি নয়, সামাজিকভাবেও চরম নিন্দনীয় কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত শুরু হয়নি। উলিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বিষয়টি এড়িয়ে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সচেতন মহল ও অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী বলছেন, “নিজ কন্যাকে জীবিত রেখে কাগজে-কলমে মেরে ফেলার মতো ঘটনা এটাই প্রথম দেখলাম। এটা কোনো পিতার কাজ হতে পারে না।” এই চাঞ্চল্যকর জালিয়াতির দ্রুত তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।