Breaking News
জুলাই ২২, ২০২৫

চীন ভারতের পানি যুদ্ধে কতটা ভূগবে বাংলাদেশ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিব্বত ও ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত খরস্রোতা নদ ব্রহ্মপুত্র। এই নদের পানি বাংলাদেশের কৃষি কাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তবে এই নদের বুকে এবার এক বিশাল বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন। তিব্বতে ‘ইয়ারলুং জ্যাংপো’ এবং ভারতে ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে পরিচিত এই নদীর ওপর নির্মিতব্য মেগা প্রকল্পের অনুমোদন গত ডিসেম্বরেই দিয়েছে বেইজিং।

চীনের এই বিরাট পরিকল্পনা কেবল বাঁধ নির্মাণ নয়, এর পেছনে রয়েছে আরও বড় লক্ষ্য। চীন চায় পরিবেশে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনতে এবং একই সাথে তিব্বত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটাতে। এই বাঁধ প্রকল্প তাদের সেই দুটি বড় স্বপ্নপূরণেরই অংশ।
বাঁধের স্থানটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই ভারত এই প্রকল্প নিয়ে চীনের কাছে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দিল্লি জানিয়েছে, তারা ‘পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীনকে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে বলেছিল, ‘উজানে চীনের কার্যকলাপে যেন ব্রহ্মপুত্রের নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়ে চীনকে সতর্ক করা হয়েছে।’
২০২০ সালে চীন প্রথম এই বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনার ঘোষণা দেয়। এর কিছুদিন পরই পাল্টা বাঁধ নির্মাণের কথা ভাবতে শুরু করে নয়াদিল্লি। আল জাজিরা গত ২৫ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের বাঁধ প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে অরুণাচলে সিয়াং নদীতে পাল্টা বাঁধের প্রস্তাব উঠেছে। তবে, বিশেষজ্ঞ এবং জলবায়ু আন্দোলনকারীরা তীব্র সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

হিমালয়ের পরিবেশ এমনিতেই বেশ দুর্বল। আর এই অঞ্চলে আগেও অনেক ভয়ংকর ভূমিকম্প ও বন্যা হয়েছে। তাই, যদি এই দুটি বিশাল বাঁধ তৈরি হয়, তবে তা ওই এলাকার এবং এর আশেপাশে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষের জীবনে ভয়াবহ বিপদ নিয়ে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি নিয়ে চীন আর ভারতের মধ্যে যে দড়ি টানাটানি চলছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ভুগবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মোট পানির ৬৫ শতাংশেরও বেশি আসে এই ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে, যদিও এর মাত্র ৮ শতাংশ দেশের সীমানার ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে। তাই, উজানে যদি পানির প্রবাহে বড় পরিবর্তন আসে, তাহলে ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন, জীবিকা আর অর্থনীতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *