মিঠুন পাল, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
লোকচক্ষুর আড়ালে গভীর রাতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফসলি জমির আকার পরিবর্তন করে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের ঘটনা ঘটেছে । এ ঘটনায় গলাচিপা থানা পুলিশ ফারুক নামে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তবে জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় জমি দখলের চেষ্টা এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের পূর্ব গোলখালী গ্রামে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী গলাচিপা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৯২৩/২৫) করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন পূর্ব গোলখালীর বাসিন্দা ফারুক মৃধা (৪০), নুর আলম মৃধা (৪৫) ও আবু মৃধা (৫০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোনতা মোল্লার ছেলে সোবাহান মোল্লার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি— পূর্ব গোলখালী মৌজার জে.এল. নং ১১৩, আরএস ৩১৩, এস.এ. ১৭১ খতিয়ানের ৩৬১০ নম্বর দাগভুক্ত ফসলি জমিতে গত ১৮ জানুয়ারি প্রবেশ করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক মাটি কেটে ঘর নির্মাণ শুরু করেন ফারুক মৃধা ও তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে জমির মালিক সোবাহান মোল্লা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। অভিযুক্তরা সোবাহান মোল্লাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, জমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল এবং স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় সোবাহান মোল্লা আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালত শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষরা ঘর নির্মাণ অব্যাহত রাখে।
ভুক্তভোগী সোবাহান মোল্লা বলেন, “ফারুক মৃধার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। উচ্চ আদালত আমাদের পক্ষে দুটি রায় দিয়েছেন। সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করার নির্দেশও রয়েছে। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে তারা জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করছে এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি গত তিন মাস ধরে নিজের বাড়িতে যেতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক মৃধা বলেন, স্থানীয় সালিসদার ও পুলিশের দেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ঘর নির্মাণ করেছি। আদালতের রায় আমরা জমি না পেলে ঘর ভেঙে নিয়ে যাবো এ সিদ্ধান্ত সালিশে দিয়েছে।
গলাচিপা থানার এএসআই হুমায়ুন কবির বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা নির্মাণকাজ ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ চলে গেলে তারা পুনরায় কাজ শুরু করে। এমন ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘর নির্মাণের অভিযোগে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।