
স্টাফ রিপোর্টার।।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুর রহমান কুদ্দুসের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব রয়েছেন আসাদুর রহমান কুদ্দুস। ওই কমিটির আহ্বায়ক মো: আনোয়ার হোসেনের সাথে সদস্য সচিব কুদ্দুসের কমিটি হওয়ার পর থেকেই কোনো সমন্বয় নেই। বিগত প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় আওয়ামী লীগের শাসনামলে রঙ্গশ্রীর বিএনপি এই সদস্য সচিব কুদ্দুস সরকার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকাও রাখতে দেখা যায়নি।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুর রহমান কুদ্দুস ২০১৬ সালে ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন শিকদারের সাথে সুসম্পর্ক রেখে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন ওই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত প্রভাব ও তার সাথে সম্পর্কের কারণে ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে এই কথিত সদস্য সচিব কুদ্দুস কোন ভূমিকাই রাখেনি।
আসাদুর রহমান কুদ্দুস ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রঙ্গশ্রী বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে কোনো কাজে আসেননি। বরং তিনি আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানের স্বার্থে কাজ করেছেন। ২০২০ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সফল করতে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিহারিপুর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা বশির উদ্দিন শিকদারের পাশের চেয়ারে বসে ওই সভায় অংশগ্রহণ করেন তৎকালীন সময় ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান কুদ্দুস। যে বর্ধিত সভার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে দেখা যায় কয়েকশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান বসির শিকদারের পাশেই বসে রয়েছেন আসাদুর রহমান কুদ্দুস। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানের স্বার্থে এখনও রঙ্গশ্রী বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে সঠিক নেতৃত্বশূন্য করে রাখেছে সদস্য সচিব কুদ্দুস। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের যে সকল নেতা কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনীতি করেছেন আসাদুর রহমান কুদ্দুস তাদেরকে এলাকায় পূর্ণবাসন করেছেন তিনি।
গত ৫ ই আগস্ট দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে সদস্য সচিব আনিসুর রহমান কুদ্দুস আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করার অভিযোগ রয়েছে এই কুদ্দুসের বিরুদ্ধে। কেউ প্রশ্ন করলে তিনি বলে ব্যালেন্স করে চলতে হয়। ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের কাবিখা এর প্রকল্প রাস্তা সংস্কার বরাদ্দ আসলে ২ নং ওয়ার্ডে নিজে প্রকল্পের সভাপতি হন। এই আসাদুর রহমান (কুদ্দুস) ৪ নং ওয়ার্ড এর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নিজামুল কাদের ( তার মামাতো ভাই) কে প্রকল্প প্রধান করে তাদের বাড়ির রাস্তায় কাজ দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কারন বিগত ১৬ বছর সে তাদের কাছ থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছে। অন্য একটি প্রকল্পের প্রধান করা হয় জাকির বিশ্বাস এর স্ত্রী মহিলা ইউপি সদস্য আলো বেগম কে। সাধারন সম্পাদক করা হয় যুবলীগ নেতা ইউপি সদস্য শামিম হাওলাদার সহযোগী সর্বদলীয় দালাল ও সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত মোঃ মাহফুজ হাওলাদার কে। দুটি প্রকল্প আওয়ামী লীগের নেতা তার মামাতো ভাইদের দিয়ে দেন। এভাবেই আসাদুর রহমান ( কুদ্দুস) একটির পর একটি অপকর্ম করে যাচ্ছেন,এবং আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের পুনর্বাসন করে যাচ্ছেন। এখন বিএনপির সাইন বোর্ড লাগিয়ে মূল বিএনপির নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পুরো রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। যেই ঘটনা স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সদস্য সচিব আসাদুর রহমান কুদ্দুসকে অপসারণে দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব, নাসির হাওলাদার জানান, সদস্য সচিব আসাদুর রহমান কুদ্দুসের বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আসাদুর রহমান কুদ্দুসকে ফোন করলে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, কিছু লোক তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।