মুহাম্মদ এমরান
বান্দরবান
লামার উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড হিমছড়িতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা,ভিকটিম মামলার আসামী।
লামার ইয়াংছা সিএনজি মাহিন্দ্র ও টমটম মালিক সমবায় সমিতি, মসজিদ পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিককে চকরিয়া থানায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ইয়াংছা সিএনজি মাহিন্দ্রা ও টমটম মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড’র সভাপতি, বাজার ব্যবসায়ী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে থানায় মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ভিলেজার পাড়ার বসিন্দা সৈয়দ আলমের ছেলে মো. সোহাগ গং কর্তৃক সংঘটিত পূর্বের একটি ছিনতাই ঘটনা ধামাচাপা দিতে চকরিয়া থানায় মামলা দিয়ে এ হয়রানি করছেন।
৮ জানুয়ারী বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা লামা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এ অভিযোগ করেন। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগ তুলে দায়ের করা মামলা থেকে রেহাই পেতে চকরিয়া থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগে জানা যায়,গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নেজাম উদ্দিন চকরিয়া থেকে মোটর সাইকেল যোগে ইয়াংছাস্থ নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এরি মধ্যে সড়কের হিমছড়ি নামক স্থানে মোটর সাইকেল থামিয়ে নেজাম উদ্দিনের উপর হামলা করেন পাশের মানিকপুর ইউনিয়নের মো. সোহাগ, মো. তারেক, আবু বক্কর ও রিদোয়ান।
শুধু তায় নয়, ওই সময় হামলাকারীরা নেজাম উদ্দিনের মোটর সাইকেলের চাবি ও একটি স্মার্ট ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ সময় নেজাম উদ্দিনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে সংঘবদ্ধ দলের ৩ জন পালিয়ে গেলেও সোহাগ ধরা পড়েন। পরে স্থানীয়রা আটক সোহাগকে ইয়াংছা আর্মি ক্যাম্পে হস্তান্তর করেন। সেখানে অভিযুক্ত সোহাগ ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও গন্যমান্য ব্যক্তির মধ্যস্থতায় একটি অঙ্গিকার নামা দিয়ে সোহাগ রক্ষা পায়।
এর জের ধরে পরদিন সোহাগ সহ তার সাঙ্গ পাঙ্গরা ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল ফোনে নেজাম উদ্দিনকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তোকে যেখানে পাবো, সেখানে মেরে ফেলবো এবং বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দিবো’।
এ ধারাবাহিকতায় গত ৯ ডিসেম্বর সোহাগ তার বাবা ছৈয়দ আলমকে বাদী করে চকরিয়া থানায় ইয়াংছা সিএনজি মাহিন্দ্র ও টমটম মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি নেজাম উদ্দিন সহ ইয়াংছা বাজার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু ইউছুফ, শ্রমিক মো. আরিফ, সাহাব উদ্দিন ও লোকমান হাকিম সহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে চকরিয়া থানায় মামলা (মামলা নং ১১/৫০০, তারিখ- ৯/১২/২৪ইং) করেন।
এর আগে হুমকির শিকার হয়ে সোহাগসহ অন্যদের বিরুদ্ধে লামা থানায় লিখিত অভিযোগও করেন নেজাম উদ্দিন। অপর ভুক্তভোগী ইয়াংছা বাজার মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী আবু ইউছুফ ও দিনমজুর সাহাব উদ্দিন বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না, এমনকি সোহাগকে আমরা চিনিও না। কিন্তু সোহাগ আমাাদেরকে কেন আসামী করেছেন তা বোধ্যগম্য নয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় হিমছড়ি পাড়ার বাসিন্দা সোলতান, আবু জাকের, নুরুল আলম, হাছান আলী ও মো. ফারুক বলেন, ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে মানিকপুরের সোহাগ সহ চার পাঁচ জন মিলে নেজাম উদ্দিনের গতি রোধ করে মোবাইল ও মোটর সাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেন। খবর পেয়ে আমরা এগিয়ে গেলে তিনজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও সোহাগ পালাতে পারেনি। তাকে আটক করে ইয়াংছা আর্মি ক্যাম্পে হস্তান্তর করি। সেখানে সোহাগ ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে অঙ্গিকারনামা দিয়ে ছাড়া পায়।
কিন্তু পরবর্তীতে শুনতেছি সোহাগ তার বাবাকে বাদী করে উল্টো নেজাম উদ্দিনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে টাকা ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ তুলে চকরিয়া থানায় মামলা করেছেন।
একই কথা জানালেন হিমছড়ি পাড়া সর্দার সৈয়দ আলম ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল। তারা বলেন, যেখানে সোহাগ দোষী সাব্যস্থ হলেও ভূল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার কারণে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ঘটনাটি মিমাংসা করা হয়। সেখানে সোহাগের বাবা চকরিয়া থানায় মামলা করাটা মোটেও উচিৎ করেননি। তবে নেজাম উদ্দিন কর্তৃক আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবী করেন সোহাগ গংরা।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানায়, ছৈয়দ আলম মামলা করার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ঘটনার তদন্ত চলছে। অচিরেই প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।